প্রথমবার সহবাস! আগে-পরে নানা প্রশ্ন মনে ভিড় করে আসে। অস্পষ্ট ধারণা নিয়ে না এগোনোই উচিত। কারও দরকার হতে পারে প্রি-ম্যারেজ কাউন্সেলিং। কখনও আবার জরুরি বিয়ের আগে কিছু মেডিক্যাল টেস্ট। জীবনের মোস্ট ওয়ান্টেড সময় কী করবেন? কী করবেন না?
এটা এমন একটা বিষয়, যার কোনও ঠিক ভুল হয় না। মাঝে মধ্যে বিজ্ঞানও এক্ষেত্রে ফেল হয়। কারও কাছে ধাঁধার মতো জটিল। কারও কাছে জলবৎ তরলং। নেই কোনও প্যারামিটার। শুধু ভালবাসার মানুষ পাশে থাকলেই ইকুয়েশন মিলবে। বিষয়টা কী বলুন তো? বলে দিলেই পড়তে পড়তে মোবাইলের স্ক্রিন ঢাকা দেওয়ার জন্য উতলা হয়ে উঠবেন। যাতে পাশের লোকটা ভাগ না পায়। কিন্তু পড়বেন ঠিকই। পড়ার পর লেখককেও হয়তো দু’টো কথা শুনিয়ে দেবেন। তবু পড়বেন। ‘সেক্স’। ছোট্ট একটা শব্দ। তাকে নিয়ে মানুষের যত লাজলজ্জা। রাখঢাক। অথচ মনে ইচ্ছে ষোলোআনা। নেটফ্লিক্স যতই সেক্স এডুকেশন নিয়ে দুই সিজনের তথ্যচিত্র বানাক, স্কুলস্তরে পাঠ্য বিষয়ের কথা উঠুক। সময় এলে অনেক অভিজ্ঞতাই প্র্যাক্টিক্যাল ফিল্ডে কাজে আসে না। তাই সব রকম ভয় কাটিয়ে পার্টনারের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলাটাই শ্রেয়।
প্রথমবার পার্টনারের সঙ্গে সহবাসে যেতে হলে কী কী কথা খেয়াল রাখবেন?
চিকিৎসক বললেন, “পার্টনারের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলাটা ভীষণ জরুরি। সেই সঙ্গে অবশ্যই দরকার কিছু মেডিক্যাল টেস্টের। কিন্তু আপনি কখন কী চাইছেন, সেটা নিজের থেকে ভাল কেউ জানে না, এটা বোঝাটাও প্রয়োজন।” ‘ফোরপ্লে’ থেকে শুরু করে ‘ইন্টারকোর্স’, যে কোনও স্টেপে ‘চরম সুখ’ পেতে আগে ডাক্তারি পরীক্ষাগুলো খুব জরুরি। কারণ, এতে আপনার মানসিক স্বস্তি থাকে। শুধু সেক্সসুয়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিজ (এইচআইভি) নয়। হেপাটাইটিস বি, সিফিলিস, গনোরিয়া, ক্যামাইডিয়ার মতো টেস্ট করানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে থ্যালাসেমিয়া টেস্টও দরকারি। যৌনতার চেকলিস্ট এখানেই শেষ নয়। বিয়ের পর পর দেখে নিন, পার্টনারের কোনও স্কিনের রোগ আছে কি না। রাউন্ড ওয়ার্ম বা দাদের মতো চর্মরোগের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। যা নিয়ে সহজে কেউ কথা বলতে চান না। সেক্ষেত্রে ডাক্তারবাবুদের পরামর্শ, “রোগ যেমনটাই হোক না কেন, রিস্ক না নিয়ে দু’জনেই চিকিৎসকের কাছে আসুন। যৌন সংসর্গের সময় যে কোনও রকমের ফাংগাল ইনফেকশন সারিয়েই সহবাসের কথা ভাববেন। না হলে হিতে বিপরীত।”
সাধারণের জন্য রইল আরও একটা কার্যকর টিপস। ইনফেকশনের হাত থেকে বাঁচতে গেলে বিছানাটা পরিষ্কার কিনা সবার আগে দেখুন। দীর্ঘদিন একই বিছানার চাদর ব্যবহার করলে বিপদ লুকিয়ে থাকে সেখানেও। আজকাল প্রি-ম্যারেজের পাশাপাশি পোস্ট-ম্যারেজ কাউন্সেলিং করাচ্ছেন অনেকেই। রিয়েল লাইফের সঙ্গে অনেকেই নিজেদের জীবনটা গুলিয়ে ফেলেন। সেখানেই সমস্যা তৈরি হয়। তখনই চিকিৎসকের কাছে দৌড়াতে হয়।” কন্ডোম, ওরাল পিল অথবা ইনজেকশন। এগুলির যেকোনও একটা, কন্ট্রাসেপটিভ বা সুরক্ষা কবচ হিসাবে ব্যবহার করতে চাইলে করতেই পারেন। তবে আজকাল কেরিয়ারে কথা ভেবে অনেকেই লেট ম্যারেজ করছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে কোন কন্ট্রাসেপটিভ কতটা ‘সেফ’, সেই বিষয়টা কাউন্সেলিংয়ের সময় ডাক্তারবাবুর কাছ থেকে জেনে নিন। অনেকের মনেই আজও একটা ধারণা রয়েই গেছে, “প্রথম সহবাস মানেই কিন্তু মেয়েটির হাইমেন ছিঁড়বে এবং রক্তপাত হবে। এটি অত্যন্ত ভুল ধারণা। একবিংশ শতাব্দীতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েরাও দৌড়াচ্ছে। ছেলেদের চিন্তাধারারও পরিবর্তন দরকার। চেম্বারে অনেকেই অনেক সমস্যা নিয়ে আসেন। এটা কোনও সমস্যা নয়। এটা আসলে অজ্ঞতা বলেই মনে করছেন চিকিৎসক।