পর্নোগ্রাফি অনেকেই দেখেন। কেউ কম-কম, কেউ বেশি-বেশি। আবার কেউ অনেক বেশি। সেই অনেক বেশিই নিয়ে আসে অনেক সমস্যা। জেনে নিন সমস্যা আর সমাধানের উপায়।
কখন সাধারণ মানুষ বুঝবেন, তিনি অতিরিক্ত পর্নোগ্রাফি দেখছেন, বা আসক্ত হয়ে পড়েছেন? কখনই বা তারা চিকিৎসার জন্য আসবেন?
উত্তর— যখন কেউ নিজে থেকেই মনে করছেন তিনি আসক্ত বা তার পার্টনার মনে করছেন যে এর জেরে তাদের স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক ব্যহত হচ্ছে, কিংবা কেউ মনে করছেন যে তাদের পরিবারের কেউ খুব বেশি পর্নোগ্রাফি দেখছে, সেজন্য অন্যদের অসুবিধে হচ্ছে, তখন যিনি পর্নোগ্রাফি দেখছেন তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে পারেন। অনেকের ক্ষেত্রে আসক্তি চলে আসে। নিজের অন্য স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হতে থাকে। যত বেশি দেখে, ততই ভাল লাগতে থাকে। ঠিক ড্রাগের নেশার মতো। এক্ষেত্রে চিকিৎসা দরকার। সত্যি বলতে, এরকম কোনও বাঁধাধরা মাপকাঠি নেই, যা থেকে বলা যায়, অতিরিক্ত পর্নোগ্রাফি দেখা হচ্ছে। এক একজনের ক্ষেত্রে এক একরকম। হস্টেলে থাকা একুশ বাইশ বছরের কোনও কলেজ ছাত্র বা ছাত্রী, সাধারণভাবে আমাদের দেশে, প্রচলিত সমাজব্যবস্থায় যার স্বাভাবিক যৌন চাহিদা মেটানোর বিশেষ উপায় নেই, তার সঙ্গে একজন মধ্যবয়ষ্ক দম্পতি কিংবা সত্তরোর্ধ মানুষের তুলনা করা যাবে না।কারও ক্ষেত্রে আবার পর্নোগ্রাফি দেখাটা অনেকটা যেন বাতিকের পর্যায়ে চলে যায়। বিনা কারণে বারে বারে হাত ধোয়ার মতো। তাদের চিকিৎসা আবার একেবারেই অন্যরকম।ফলে বিষয়টি জটিল। এককথায় ভাল, না খারাপ বলা সম্ভব নয়। মনে রাখতে হবে, একজন অ্যাডাল্ট পুরুষ এবং মহিলার শারীরিক চাহিদা থাকা এবং তা মেটানোর বিষয়টি পুরোপুরি প্রাকৃতিক। সেটা বয়ঃসন্ধি পার করা দুটি মানুষেরমধ্যে হতে পারে, আবার সেলফ স্টিমুলেশন অর্থাৎ নিজেকে নানাভাবে উত্তেজিত করেও হতে পারে। এই উত্তেজিত করার ক্ষেত্রে পর্নোগ্রাফি একটা মাধ্যম।
তার মানে কি পর্নোগ্রাফি থেকে সামাজিক, পারিবারিক সমস্যা হচ্ছে না?
উত্তর— একবারও কিন্তু তা বলছি না। অবশ্যই সমস্যা হচ্ছে। মুশকিল হল, সেক্স বিষয়টি নিয়ে আমাদের অজ্ঞতা। ভয়। ছুৎমার্গ। আমরা নাচ শিখি। ছবি আঁকা শিখি। ছোটবেলাতেই শেখানো হয়। কিন্তু আমাদের দেশে বয়ঃসন্ধির সময় সঠিকভাবে কেউ সেক্সের বিষয়টি শেখায় না।শারীরিক নানা বদলের ব্যাপারেও জানায় না। ছেলেমেয়েরা নিজের মতো করেই জানতে থাকে। এবং অনেকটাই বেঠিকভাবে জেনে নেয়। এতেই শুরু হয় সমস্যা।
তাহলে চিকিৎসা?
উত্তর— সে তো অবশ্যই আছে। কারও ক্ষেত্রে ওষুধ, কারও বা কাউন্সিলিং। পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি নিয়ে কেউ এলেন কিন্তু দেখা গেল তার মূল সমস্যা ডিপ্রেশন।কারও ক্ষেত্রে পর্নোগ্রাফি আবার অবসেশনে পরিণত হয়েছে। ফলে চিকিৎসা অবশ্যই আলাদা।অনেক সময় স্বামী স্ত্রী বা কাপলকে একসঙ্গে বসিয়ে চিকিৎসা করা হয়। সাধারণত সপ্তাহে একটি হিসেবে মোট চব্বিশটি সিটিং লাগে। তার কম বা বেশিও লাগতে পারে। বিদেশে এই সংক্রান্ত চিকিৎসা করতে গিয়ে দেখেছি, কতখানি যুক্তিনিষ্ঠ মন নিয়ে এই ধরণের চিকিৎসা করা হয়। কখনও কখনও নিয়ন্ত্রিত পর্নোগ্রাফি দেখাও সেখানে চিকিৎসার একটা অঙ্গ।