হস্তমৈথুন আসলে কি?
হস্তমৈথুন বা স্বমেহন একরূপ যৌনক্রিয়া যাতে একজন ব্যক্তি কোনো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অংশগ্রহণ ব্যতিরেকেই যৌনসুখ অর্জনের চেষ্টা করে। আত্মমৈথুন ও স্বকাম এর সমার্থক শব্দ। এ যৌনক্রিয়ায় প্রধানত হাতের সাহায্যে পুরুষ তার লিঙ্গ এবং নারী তার যোনি ঘর্ষণ করে বলে একে সচরাচর হস্তমৈথুন হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। স্বমেহন হচ্ছে নিজের জননাঙ্গে যৌন উদ্দীপনা প্রদান যার মাধ্যমে যৌন উত্তেজনা তৈরি হয় বা অন্যান্য যৌন সন্তুষ্টি লাভ হয়, সাধারণত রাগমোচন লাভ পর্যন্তই এটি চালিয়ে যাওয়া হয়।
হস্তমৈথুনের কুফল বা অপকারিতা গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
১। পুরো শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং শরীর রোগ-বালাইয়ের যাদুঘর হয়ে যায়।
২। চোখের ক্ষতি হয়।
৩। স্মরণ শক্তি কমে যায়।
৪। মাথা ব্যথা হয়, মাথা ঘোরে।
৫। সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল পদার্থ বের হয়ে যায় এবং শারিরীক ব্যথা হয়।
৬। যৌন ক্রিয়ার সাথে জড়িত স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হয়ে যায় অথবা ঠিক মত কাজ না করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
৭। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন- হজম প্রক্রিয়া এবং প্রসাব প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে। দ্রুত বীর্যস্থলনের প্রধান কারন অতিরিক্ত হস্তমৈথুন।
৮। হস্তমৈথুনের ফলে অনেকেই কানে কম শুনতে পারেন।
৯। শারিরীক ফিটনেস নষ্ট হয়ে যায়। অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে গাল ভেঙে যায় এবং শরীর জীর্ণশীর্ণ হয়ে যায়।
১০। অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে কাজ করার স্পৃহা কমে যায়। কাজের প্রতি উদাসীনতা তৈরী হয়।
১১। হস্তমৈথুনের কারণে পুরুষাঙ্গে ছিদ্র তৈরী হতে পারে।
১২। বিভিন্ন যৌন রোগ হতে পারে যেমন- লিঙ্গের আগা মোটা, গোড়া চিকন ইত্যাদি।
১৩। হস্তমৈথুনের কারণে শুধু শারিরীক সমস্যা-ই নয়, বরং মানসিক সমস্যা হওয়াটাও খুব স্বাভাবিক।
হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়ঃ
1. কোন কোন সময় হস্তমৈথুন বেশি করেন, সেই সময় গুলো চিহ্নিত করুন। বাথরুম বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি উত্তেজিত থাকেন, বা হঠাৎ কোন সময়ে যদি এমন ইচ্ছে হয়, তাহলে সাথে সাথে কোন শারীরিক পরিশ্রমের কাজে লেগে যান।
2. যেসব ব্যাপার আপনাকে হস্তমৈথুনের দিকে ধাবিত করে সেগুলো ছুড়ে ফেলুন। সেগুলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেন। যদি মাত্রাতিরিক্ত হস্তমৈথুন থেকে সত্যি সত্যি মুক্তি পেতে চান তাহলে পর্ণ মুভি বা চটির কালেকশন থাকলে সেগুলো এক্ষুনি নষ্ট করে ফেলুন।
3. হস্তমৈথুন একেবারেই ছেড়ে দিতে হবে না। নিজেকে বোঝাবেন যে মাঝে মাঝে করবেন। ঘনঘন নয়। তাহলে আপনি আস্তে আস্তে পুরোপুরি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি পাবেন।
4. যারা বাজে বিষয় নিয়ে বা মেয়েদের নিয়ে বা পর্ণ মুভি বা চটি নিয়ে বেশি আলোচনা করে, তাদেরকে এড়িয়ে চলুন। সব সময় তাদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। তাদের বেশি সময় দেবেন না।
5. হস্তমৈথুনে চরমভাবে অ্যাডিক্টেড হলে কখনোই একা থাকবেন না, ঘরে সময় কম কাটাবেন, বাইরে বেশি সময় কাটাবেন।
6. জগিং করতে পারেন, সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ছাত্র হলে ক্লাসমেটদের সাথে একসাথে পড়াশুনা করতে পারেন। লাইব্রেরি বা কফি শপে গিয়ে সময় কাটাতে পারেন। তবে সবসময় কারও না কারও সাথে থাকার চেষ্টা করবেন।
7. সন্ধ্যার সময়ই ঘুমিয়ে পড়বেন না। কিছু করার না থাকলে মুভি দেখুন বা বই পড়ুন। তবে একা নয়, পরিবারের অন্যদের সাথে দেখুন।
8. হস্তমৈথুনের কুফল থেকে বাঁচতে ভিডিও গেম খেলতে পারেন। এটাও হস্তমৈথুনের কথা ভুলিয়ে দেবে। যে গেমগুলো খুব ভালো মানের এবং বুদ্ধি দিয়ে খেলতে হয় সেগুলো খেলুন।
9. সেক্সুয়াল ব্যাপারগুলো একেবারেই এড়িয়ে চলবেন। এ ধরনের কোন শব্দ বা মন্তব্য শুনবেন না। কেউ এই বিষয়ে আলোচনা করলে তাদের এড়িয়ে চলুন।
10. হস্তমৈথুনের কুফল থেকে বাঁচতে ছোট ছোট টার্গেট সেট করুন। ধরুন প্রথম টার্গেট টানা দুইদিন হস্তমৈথুন করবেন না। দুইদিন না করে পারলে ধীরে ধীরে সময় বাড়াবেন। এভাবে করা ছাড়া আপনি হস্তমৈথুন থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না।
11. যখন তখন বিছানায় যাবেন না। কোথাও বসলে অন্যদের সঙ্গ নিয়ে বসুন। সবাইকে সময় দিন।
12. বাথরুম শাওয়ার নেয়ার সময় হস্তমৈথুনের অভ্যাস থাকলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাথরুম থেকে বের হয়ে আসতে চেষ্টা করুন।
13. নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করবেন, আপনার সাথে যারা আছে তাদের কথা ভাববেন। আপনার জীবন নিয়ে চিন্তা করবেন। সৃষ্টিকর্তার রহস্য নিয়ে চিন্তা করবেন।
14. ঘুমানোর সময় মাঝে মাঝে আন্ডার প্যান্ট পরেই ঘুমাবেন। প্রতিদিন নয়। তাহলে কিন্তু ক্ষতি হতে পারে। আর সব সময় একটা কথা মাথায় রাখবেন তা হলো – সমস্যাটা কিন্তু আপনার নিজের সুতরাং সমাধানটা আপনার নিজেরই করতে হবে।
পরিশেষে বলতে চাই, হস্তমৈথুন কোনোভাবেই ভালো কিছু বয়ে আনে না। বলা হয়ে থাকে যে, সপ্তাহে ১ দিন হস্তমৈথুন করলে কোনো ক্ষতি হয় না।