মেনোপজ মানেই বুড়িয়ে যাওয়া নয়। আর বয়সের সঙ্গে যৌন উত্তেজনা হারিয়ে যায়, এমনটা ভাবাও ঠিক নয়। এমন একটা ধারণা আছে যে, বয়স হলেই মহিলাদের যৌন ইচ্ছা কমে যায়। কিন্তু সেটা পুরোপুরি ঠিক নয়। হয়তো পরীক্ষা করলে দেখা যাবে সেই মহিলা কম ঘুম বা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন। মেনোপজের পরে এমনিতেও অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া দেখা যায় অনেকের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফুরফুরে সেক্স লাইফ আর ঘুমের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। ঘুম যদি কম হয়, তাহলে শারীরিক উত্তেজনা হারিয়ে যাবে অচিরেই। অ্যানঅর্গাজমিয়ার সমস্যাতেও ভুগতে পারেন মহিলারা।
ঘুম কম মানেই নানাবিধ অসুখবিসুখ ধরবে। মানসিক অবসাদ গ্রাস করবে। আর শরীরই যদি ভেতর থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে তাতে উত্তেজনা বা উদ্দীপনা কোনওটাই জাগবে না।
মাঝবয়সী বা চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে মেনোপজ হয়ে গিয়েছে বা মেনোপজের সময় এগিয়ে এসেছে যাঁদের, তাঁদের বেশিরভাগই শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছা বা আগ্রহ দুটোই হারিয়ে ফেলেছেন। কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে যে এমনটা দেখা যায়নি তা নয়। তবে সংখ্যায় মাঝবয়সীরাই বেশি। গবেষকরা বলছেন, যৌন উত্তেজনা হারিয়ে যাওয়ার পিছনে যেমন নানাবিধ শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে, তেমনই কম ঘুম বা অনিদ্রাও একটা বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। কম ঘুম মানে কম সময় ধরে ঘুম নয়, টানা নিশ্ছিদ্র ঘুম। রাতের বেলা এই টানা ঘুমটাই যদি না হয়, তাহলে শরীর বিগড়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। সেক্সুয়াল ডিসফাংশন বা যৌনতাজনিত রোগও দেখা দেওয়া অসম্ভব নয়।
ঘুম হল মস্তিষ্কের একটি জটিল ক্রিয়া। এর প্রধান কাজ আমাদের শরীরকে বিশ্রাম দেওয়া এবং আমাদের শারীরিক ক্ষমতাকে পুনরুদ্ধার করা। সুস্থ থাকার জন্য এক জন মানুষের নির্দিষ্ট সময় স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে ঘুমনো দরকার। স্বাস্থ্যসম্মত ঘুম মানে হল কোনওরকম ব্যাঘাত ছাড়াই একটানা ঘুম। এই টানা ঘুম আমাদের শরীরে শক্তি সঞ্চারিত করে। অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলোকে সচল ও সক্রিয় করে। ঘুম কম মানেই মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে পড়বে, শরীর তার স্বাভাবিক কাজকর্মে ইস্তফা দেবে।
মেনোপজের পরে এই অনিদ্রার সমস্যা আরও বাড়ে। যদি মানসিক চাপ থাকে তাহলেই এমনিতেই ঘুম কমে যায়। যে কারণে বুক ধড়ফড় বাড়ে মহিলাদের, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। সঙ্গমে ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেন অনেকেই। কম ঘুমের কারণে অ্যানঅর্গাজমিয়ায় ভুগছেন অনেকে। চুড়ান্ত যৌন উত্তেজনার সময়েও অর্গ্যাজম হচ্ছে না তাঁদের। এর পিছনে মানসিক চাপ, সঙ্গীকে নিয়ে সমস্যা, হরমোন বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা যেমন আছে, তেমনই ইনসমনিয়ার সমস্যাও আছে।