প্রত্যেক মানুষের সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালো বোঝা-পড়া থাকার পাশাপাশি দরকার স্বাস্থ্যকর যৌন জীবন, যা একটি সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে খুবই কার্যকর। অথচ প্রায়ই দেখা যায় যৌন সমস্যার কারণে শুরু হয় সংসারে অশান্তি, পরবর্তীকালে যার পরিণতি গিয়ে দাঁড়ায় বিচ্ছেদে। অনেক সময় আপনি অনুভব করতে পারেন যে, আপনার যৌন জীবনে কিছু ঘাটতি রয়েছে। কখনও যদি সত্যিই কিছু ঘাটতি অনুভব করেন তবে, তা পূরণ করতে প্রয়োজন কিছু পরিবর্তন ও কিছু প্রচেষ্টার।
১) যৌনতা সম্পর্কে কথা না বলা প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে যে, কেউ কারও মনের কথা পড়তে পারে না। যদি কখনও আপনি মনে করেন যে, আপনার সঙ্গী আপনার যৌন আকাঙ্ক্ষাগুলি সম্পর্কে অবগত, তবে আপনি ভুল ভাবছেন। এক্ষেত্রে, আপনি এবং আপনার সঙ্গী দুজনে মিলে একে অপরের ইচ্ছা এবং কল্পনাগুলি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন। যদি দেখেন যে, আপনার সঙ্গী কোনও একটি ক্ষেত্রে অক্ষম তবে, আলোচনার মাধ্যমে সেই বিষয় সম্পর্কে তাকে স্বচ্ছন্দ করে তুলতে পারেন। এভাবে পারস্পারিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে নিজেদের যৌন জীবনকে স্বচ্ছন্দময় করে তুলুন এবং একটি সুন্দর জীবন অতিবাহিত করুন।
২) সর্বদা এক পক্ষের আগ্রহ আপনি যদি কখনও অনুভব করেন যে, সর্বদা আপনার পক্ষ থেকেই যৌনতার ইঙ্গিত প্রেরিত হচ্ছে এবং অপর পক্ষের ব্যক্তি যৌনতায় কোনও প্রকার আগ্রহ প্রকাশ করছে না, সেক্ষেত্রে আপনার যৌন জীবনে পরিবর্তন আনার এটিই ভাল সময়। প্রোফাইল পিকচারই বলে দেবে আপনার ব্যক্তিত্বের ধরন! আপনাদের বুঝতে হবে যে, যদি আপনারা উভয়েই সমানভাবে যৌন সম্পর্কে জড়িত থাকেন, তবেই এটি আপনার সম্পর্কের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই একে অপরের প্রয়োজনীয়তা এবং আকাঙ্ক্ষাগুলি সম্পর্কে অবগত হন এবং তা অনুসরণ করে সুস্থ যৌন জীবন যাপনের উপায় তৈরি করুন।
৩) ফোরপ্লে-এর অভাব ফোরপ্লে ব্যতীত যৌনতা মাঝে মধ্যেই বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। যখন উভয়ের মধ্যে সময়ের অভাব থাকে তখন ফোরপ্লে ব্যতীত যৌনতা উত্তেজনাপূর্ণ এবং সন্তোষজনক হতে পারে। কিন্তু দুজনের প্রচুর সময় থাকা সত্ত্বেও যদি একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি ঘটে তখন তা সুস্থ যৌনতার ক্ষেত্রে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। আপনি যদি ভাবেন যে, ফোরপ্লে আনন্দ এবং সন্তুষ্টির জন্য সঠিক নয় তবে, আপনি ভুল ভাবতে পারেন। আপনার সঙ্গী কী পছন্দ করে তা জানার একমাত্র উপায় ফোরপ্লে। এছাড়াও, সরাসরি যৌনতায় লিপ্ত না হয়েও মানসিক দিক থেকে এটি আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারে এবং এটি আপনার সঙ্গীর সাথে আরও গভীর সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করতে পারে।
৪) যৌনতার পরে দূরে থাকা বা শান্ত হয়ে যাওয়া যদি এই লক্ষণটি আপনার ক্ষেত্রে হয়, তবে সুস্থ যৌন জীবন যাপনের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই এর পরিবর্তন আনার প্রয়োজন আছে। প্রেম করার পরে, পিছন ফিরে না ঘুমানোর চেষ্টা করুন। কারণ এর ফলে, আপনার সঙ্গীর মনে অবহেলিত এবং বঞ্চিত বোধের জন্ম নেয়। নব দম্পতিরা যৌথ পরিবারে থেকে কীভাবে একে অপরকে সময় দেবেন? আপনাদের জন্য রইল কিছু টিপস্ এক্ষেত্রে, যৌন সম্পর্কের পর আপনার সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে তাকে ভালবাসার অনুভুতি দিন, যা পরবর্তীকালে আপনাদের জীবনে রোম্যান্সকে বাড়িয়ে তুলবে। এছাড়াও, আপনাদের মধ্যে একটি গভীর সংবেদনশীল বন্ধন থাকবে এবং এটি যৌন জীবনকে সুস্থভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
৫) একে অপরকে দোষারোপ করা অনেক সময় দম্পতিদের মধ্যে যৌন জীবনে কোনও উত্তেজনা না থাকার জন্য সঙ্গীর উপর দোষ চাপাতে দেখা যায়। নিজের অসন্তুষ্টির কারণ হিসেবে সঙ্গীকেই দোষারোপ করে থাকি আমরা। কিন্তু, এটি করা উচিত নয়, দোষারোপ করা থেকে এড়াতে হবে। কারণ, এটি আপনাদের যৌনজীবন এবং সম্পর্কে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। আপনাদের উভয়কেই বুঝতে হবে যে, যৌন সম্পর্কে আপনারা দুজনেই জড়িত। ফলে, পুরো দোষটি একজন ব্যক্তির উপর চাপিয়ে দেওয়ার কোনও মানে হয় না। সঙ্গীর সাথে যৌনতা সম্পর্কে সৎ কথোপকথনের মাধ্যমে সমস্যাগুলি সমাধান করতে চেষ্টা করুন। হারিয়ে যাওয়া যৌন জীবনের সম্পর্ককে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করুন। খুঁজে বার করুন আরও উৎসাহীপূর্ণ কিছু সঠিক উপায়।
৬) একই পদ্ধতি অনুসরণ করা আপনি এবং আপনার সঙ্গী যদি বারবার একই আচরণ করে চলেছেন তবে, এটি আপনাদের জীবনের যৌন জীবনে পরিবর্তন আনার একটি লক্ষণ হতে পারে। একই পদ্ধতি অনুসরণ করার পরিবর্তে, আপনারা আরও উত্তেজনাপূর্ণ কিছু উপায় সম্পর্কে ভাবতে পারেন। আপনি আপনার রান্নাঘরে প্রেম করার চেষ্টা করতে পারেন বা চোখে চোখে কথা বলতে পারেন। এছাড়াও, আকর্ষণীয় পোশাক পরতে পারেন, বিশেষত মহিলারা। এইভাবে আপনি অবশ্যই আপনার যৌন জীবনে পরিবর্তন আনতে পারবেন।