বিয়ের সিদ্ধান্ত যখন নিয়ে ফেলেছেন, তখন নিশ্চয়ই বেশ কিছু ব্যাপার মেনে আর মানিয়ে নেওয়ার জন্যও মনকে প্রস্তুত করে ফেলেছেন। তবুও কিছু কিছু ব্যাপার থাকে খুব সাধারণ মনে হলেও একটা সময়ে হঠাত্ই মন এগুলির বিষয়ে বিদ্রোহ করে ওঠে। তখনই শুরু হয় অসন্তোষ। তবে বিয়ের আগেই খুব ভালো করে বুঝে নিতে হবে যে, এই বিষয়গুলি চাইলেও মনের মতো হবে না। তবু তা মানতেই হবে। আর বরাত জোরে সমস্যা না হলে তো তার থেকে ভালো কথা আর কিছু হয় না।
রইল তেমনই কয়েকটি খুব সাধারণ কিন্তু খুবই অসুবিধের বিষয় নিয়ে আলোচনা, যেগুলি মানিয়ে নিতে সকলেই এক প্রকার বাধ্য থাকে।
১) স্বাধীনতা হারানো
বিয়ের আগে পর্যন্ত ছেলে-মেয়ে উভয়ই যে স্বাধীনতা উপভোগ করেছেন, বিয়ের পরেও তাই করবেন, তা কখনওই সম্ভব নয়। বিয়ের পর থেকে বাড়ি ফিরতে রাত হলে সঙ্গীটিকে জানাতেই হবে। এমনকী বাড়ির বাইরে রাত কাটাতে হলেও তা জানাতে হবে, সেটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। এই বাধ্যতার বিষয়টি অনেকেই মেনে নিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে বলা যায়, আগে থেকে মনকে প্রস্তুত করুন। তা না হলে বিয়ের বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখুন।
২) ঘর ভাগভাগি
বিয়ে মানেই সব কিছুর সমান ভাবে ভাগ করে নেওয়ার একটি দায়িত্ব বোধ এসে পড়া। এ কথা জানা সত্বেও দীর্ঘদিন একা একটা ঘরে থাকার অভ্যাস যাদের হয়ে যায়, তাদের প্রথম প্রথম কিছু সমস্যা তো অবশ্যই হয়। কারণ দু’টি মানুষের সব কিছুই আলাদা ধরনের। ঘুমোতে যাওয়া, ঘুম থেকে ওঠা, খাওয়া-দাওয়ার সময় ভাগ করা ইত্যাদি। ফলে মিল হয় না প্র্যাত্যহিক জীবনের রুটিনে। তাই অসুবিধে হয়-ই। তবে তাকে প্রশ্রয় দিলে চলবে না। দু’জনকেই দু’জনেরটা মানিয়ে আর মেনে নিতে হবে। দু’জনকেই অভ্যাসের পরিবর্তন করে একটি সমঝোতায় আসতে হবে।
৩) বাথরুমের সমস্যা
অনেকেরই একা একটি বাথরুম ব্যবহারের অভ্যাস থাকে, ভেজা মেঝে বা ব্যবহার করা টয়লেট সিট ব্যবহার করতে মানসিক সমস্যা হয়। তা ছাড়া ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারটা তো রয়েছেই। ফলে এই জায়গাটায় আপস করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। প্রয়োজনে নিজের মতো করে কিছু ব্যবস্থা করে নিতে হবে, যাতে অন্য জনের খারাপ লাগা বা অসুবিধে না হয়।
৪) অর্থই সর্বনাশের মূল
বিয়ের পরে দু’জনের সব কিছুতে যেমন দু’জনের অধিকার বোধ জন্মায় ঠিক তেমনই উপার্জন করা অর্থের ক্ষেত্রেও তাই। সে ক্ষেত্রে দু’জনে রোজগেরে হলে স্বামীর অর্থ স্ত্রীর আর স্ত্রীর অর্থ স্বামীর – এটা মেনে নিতে হবে। ফলে খরচের ক্ষেত্রে একে অপরকে সাবধান করা বা বারণ করার বিষয়টি এসেই যায়। সেটি অনধিকার চর্চা ভেবে ক্ষুব্ধ হওয়া ঠিক নয়। ফলে সেইটি মানিয়ে নেওয়ার জন্যও মন প্রস্তুত করতে হবে। আমার আমার করলে হবে না।
৫) যৌন সমস্যা
বিয়ের সঙ্গে একটি ব্যাপার ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত রয়েছে তা হল যৌন সম্পর্কের বিষয়টি। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে একটা বড়ো জায়গা জুড়ে থাকে যৌনতা। অনেকেরই যৌনতায় দ্রুত একঘেয়েমি চলে আসে। সে ক্ষেত্রে অন্য জনের তা নাও হতে পারে। সেই বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক ও জটিল সমস্যার। এই ক্ষেত্রে বিষয়টিতে যেমন বাধ্য করা যায় না। ত্যাগ করাটাও সমস্যার। তাই সমাধান খুঁজতে হবে নিজেদেরই। একে অপরের মন, ইচ্ছা, অভ্যাস, মেন্টাল ব্লকেজ ইত্যাদিগুলি নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে। একে অপরকে নিজের নিজের সমস্যা মন খুলে বলতে হবে। দরকারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।