অস্বীকার করে লাভ নেই, ছোটবেলা থেকেই শারীরিক মিলন কিংবা sex কথাটা শুনলেই বাড়ির বড়রা এমন চোখ রাঙাতেন যে, এই শব্দটি নিয়ে ‘এডুকেশন’ তো দূর স্থান, এটি উচ্চারণ করলেও পাপ হবে টাইপস একটা ব্যাপার ছিল! ফলে বেশিরভাগ বাঙালি মেয়েই সেক্স সম্বন্ধে ভাসা-ভাসা জেনেছে হয় বন্ধুদের কাছ থেকে, নয় ওঁচা ম্যাগাজিন পড়ে, কিংবা খুব আধুনিক হলে পর্ন সাইট ঘেঁটে। কিন্তু এর কোনওটিই আমাদের এটা শেখায় না যে, শারীরিক মিলন ব্যাপারটিও যে অত্যন্ত স্বাভাবিক, এটি শুধু মানুষ নয়, যে-কোনও প্রাণীই করে থাকে এবং বংশবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি এই শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াটি সম্বন্ধে সকলের, বিশেষ করে মেয়েদের সম্যক জ্ঞানলাভের প্রয়োজন আছে ।
শারীরিক মিলনের সময় কিংবা sex-এর সময় পুরুষ এবং নারী, উভয়ের শরীরেই কিছু অনুভূতির খেলা চলে (woman’s body experiences these things during sex)। এগুলিকে ঠিক মানসিক অনুভূতি বলা যায় না, আবার পুরোপুরি শারীরিকও বলা যায় না। কিন্তু এগুলি সম্বন্ধে ঠিকঠাক জানা না থাকলে যে ধোঁয়াশা আপনার মনে থেকে যাবে, সেটি কাটিয়ে সেক্সের আনন্দ পুরোপুরি উপভোগ করতে পারবেন কই? তাই আজ আমরা মহিলাদের এমন তিনটি শারীরিক অনুভূতির কথা বলব, যেগুলো হয়তো সেক্স চলাকালীন আমরা অনেকেই প্রত্যক্ষ (experience) করি, কিন্তু বুঝে উঠতে পারি না যে, ব্যাপারটা কী হচ্ছে!
১. স্কোয়ারটিং (Squirting)
সেক্স চলাকালীন অনেকসময় আমাদের যৌনাঙ্গ দিয়ে অনেকটা প্রস্রাবের মতো তরল পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসে। আবার অনেক সময় বেরোয়ও না। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় স্কোয়ারটিং। এটি কিন্তু একেবারেই সাদা স্রাব নয়। আবার প্রস্রাবও নয়। যদিও পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে, স্কোয়ারটিংয়ের মাধ্যমে বেরনো তরলের কম্পোজিশন অনেকটাই প্রস্রাবের মতো, কিন্তু পুরোপুরি নয়। সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে যে, শতকরা ৫৪ শতাংশ মহিলা শারীরিক মিলনের সময় স্কোয়ারটিং অনুভব করেন। তবে দোহাই, পর্নোগ্রাফিতে যে ধরনের জেট স্প্রে-র মতো স্কোয়ারটিং দেখানো হয় অনেকসময়, বাস্তবে ব্যাপারটা মোটেও তা নয়। ওটা ড্রামাটাইজেশন, মাথায় রাখবেন। তবে এক্ষেত্রে একটা কথা বলা দেওয়া জরুরি। স্কোয়ারটিং হলেও আপনি সুস্থ, স্বাভাবিক যৌন জীবন যাপন করছেন, স্কোয়ারটিং না হলেও আপনি একটুও ঘাবড়ে যাবেন না। আবার কখনও সেক্সের সময় স্কোয়ারটিং হল, কখনও হল না, এমনটাও পুরোপুরি স্বাভাবিক। দয়া করে এটি নিয়ে ভাবতে বসে নিজের সেক্স লাইফের বারোটা বাজাবেন না!
২. কুইফিং (Queefing)
সেক্স চলাকালীন যখন আপনার পার্টনারের পুরুষাঙ্গ আপনার যৌনাঙ্গে প্রবেশ করে, তখন অনেক সময় একটা অদ্ভুত আওয়াজ হয়। অনেকটা বাতকর্মের মতো। তফাত শুধু এই গ্যাসজনিত আওয়াজটি যে আপনার পায়ু দিয়ে বেরোয়নি, উল্টো ভ্যাজাইনা দিয়ে বেরিয়েছে, সেটি আপনি অন্তত স্পষ্ট বুঝতে পারবেন। একেই বলে কুইফিং। আসলে মেয়েদের ভ্যাজাইনাল ক্যাভিটিতে অনেক সময় হাওয়া আটকে থাকে। ঠিক যেমন, আমাদের শরীরের যে-কোনও অংশে গ্যাস জমে, সেরকম। সেক্সের সময় সেটাই অনেকসময় বেরিয়ে যায়। এটা নিয়ে লজ্জা বা ভয়, কোনওটাই পাওয়ার কিছু হয়নি। যদি আপনার পার্টনার এই শব্দ নিয়ে কোনওরকম প্রশ্ন তোলেন কিংবা হাসিঠাট্টা করতে যান, তাঁকে বলে দিন, কুইফিং শব্দটি গুগল করে নিতে, ব্যস!
৩. নন-লুব্রিক্যান্সি অফ ভ্যাজাইনা (Non lubricancy of vagina)
এটা খুবই কমন ব্যাপার। এর মানে হল, সেক্সের সময় আপনার ভ্যাজাইনার শুকিয়ে থাকা। সাধারণত আমাদের শরীর যখন উত্তেজিত হয়, তখন ভ্যাজাইনার কাছে সেই সঙ্কেত আগে থেকেই পৌঁছে যায়। সেটি আপনা থেকেই লুব্রিক্যান্ট তৈরি করতে শুরু করে যাতে মিলনের প্রক্রিয়াটি মসৃণ হয়। কিন্তু অনেক সময় তা না-ও হতে পারে। এর পিছনে কারণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে, ফোরপ্লের সময় কম হওয়া, দ্রুত অর্গাজমে পৌঁছনোর চেষ্টা, স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি ইত্যাদিকে। আবার অনেক মেয়ের শরীর স্বাভাবিকভাবেই কম লুব্রিক্যান্ট তৈরি করে। সুতরাং, এটি নিয়ে চিন্তা করারও কোনও কারণ নেই। বরং সেক্ষেত্রে কোনও আর্টিফিশিয়াল লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার করে দেখতে পারেন।