সেক্স (sex), যৌনতা, মিলন, শারীরিক সম্পর্ক – এই শব্দগুলো নিয়ে বর্তমানে আমাদের মধ্যে যত ছুঁৎমার্গ রয়েছে, আমাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে কিন্তু তার সিকিভাগও ছিল না। বলা যেতে পারে তাঁরা এই বিষয়টিতে যথেষ্ট আধুনিকমনস্ক ছিলেন এবং প্রকাশ্যে সেক্স (sex) বা যৌনতা নিয়ে কথা বলতে কোনওরকম লজ্জাবোধ তাঁদের ছিল না। আর সত্যিই তো, যৌনতা নিয়ে কথা বলতে লজ্জার কী আছে সেটাই তো আজ অবধি বুঝে উঠতে পারলাম না। খাওয়া-ঘুম, সর্দি-কাশির মতো যৌন চাহিদাও যে একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রবৃত্তি – একথা কবে বুঝবেন জানি না।
যাই হোক, প্রাচীন ভারতের (ancient time) একটি বিশেষ বই রয়েছে যা আজও সমানভাবে জনপ্রিয় এবং তা হল ‘কামসূত্র’ (kamasutra)। বইটি লেখা হয়েছিল দ্বিতীয় শতকে এবং এতে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে নিয়মিত শারীরিক মিলন স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা উপকারী। শুধু তাই-ই নয়, সম্পূর্ণ পরিতৃপ্তি পাওয়ার নানা উপায়ও বলা আছে। চলুন, আমরাও বরং জেনে নিই যে প্রাচীনকালে (ancient time) কী কী নিয়মে (rules) মিলিত হওয়ার (sex) কথা বলা আছে এবং তা আপনার ও আপনার সঙ্গীর স্বাস্থ্যের পক্ষে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
কামসূত্র অনুযায়ী শারীরিক মিলনের মূল নিয়মগুলি কী কী–
১। শারীরিক মিলনের (sex) ক্ষেত্রে প্রাচীনকালে (ancient time) আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা হত, যা অবশ্যই বিজ্ঞানসম্মত। প্রথমত বলা হয়েছে, মহিলাদের ঋতুস্রাবের সময়ে প্রথম চার দিন কোনও রকম শারীরিক মিলনে লিপ্ত হওয়া যাবে না। তাতে জীবাণুসংক্রমণ হতে পারে। তবে ঋতুস্রাবের ১৪ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে অতি অবশ্যই সঙ্গীর সঙ্গে মিলিত হতে পারেন যদি আপনি সন্তান চান।
২। যদিও অনেকেই সক্কাল সক্কাল শারীরিক মিলনে (sex) লিপ্ত হন আজকাল, কারণ ‘মর্নিং সেক্স’-এর আমেজই আলাদা বলে অনেকে মনে করেন; তবে প্রাচীনকালে (ancient time) বলা হত, প্রভাতকালে শারীরিক মিলনে লিপ্ত হওয়া নিষিদ্ধ। এছাড়াও গ্রহণ, সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত, মৃত্যু, শ্রাবণ মাস, নক্ষত্র, দিওয়ালকাল, ভদ্র, শ্রাদ্ধ, অমাবস্যায় নারী-পুরুষের মিলন নিষিদ্ধ (rules) বলে বলা আছে।
৩। কোনও পুরুষ বা নারী, একাধিক মানুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারবেন না – এমন কথাও বলা হয়েছে প্রাচীন পুঁথিতে(kamasutra)। যদি কোনও পুরুষ বা নারী, বিশেষ করে তিনি যদি বিবাহিত হন এবং নিজের স্বামী বা স্ত্রী ব্যতীত অন্য কারও সঙ্গে যৌন সম্পর্কে থাকেন, তাহলে সেই সম্পর্কগুলি অনৈতিক বলে বিবেচিত হত।
৪। এখনও যেমন চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন যে গর্ভাবস্থায় শারীরিক মিলন (sex) করা যাবে না (rules), আগেকার দিনেও এই নিয়মটি প্রচলিত ছিল। গর্ভবতী মহিলারা শারীরিক মিলনে বিরত থাকতেন, এমনকি শিশুর জন্মের বেশ কিছুদিন পরেও এই নিয়ম মেনে চলার পরামর্শই দেওয়া হত। এতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপরে প্রভাব পড়তে পারে বলেই এই নিয়ম।
৫। আপনার স্বামী বা প্রেমিক যখন চুড়ান্ত হতাশায় ভুগছেন অথবা যদি তিনি ক্লান্ত থাকেন, সেসময়ে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক তৈরি করা উচিত না। এর ফলে তার মধ্যেকার নেগেটিভিটি আপনার মধ্যে আসতে পারে। একথা আমি বলছি না, প্রাচীন বইটি বলছে।
৬। ‘কামসুত্র’র (kamasutra) রচয়িতা বাৎস্যায়নের মতে, শুধুমাত্র পুরুষদের নয়, মহিলাদেরও যৌনতা (sex) সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা দরকার। এতে তাঁদের যৌন জীবন আরও বেশি সমৃদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাঁর মতে, যে নারী-পুরুষের যৌন জীবন সুখের, তাঁদের জীবনও সুখের হয়।
৭। কামসূত্র (kamasutra) অনুযায়ী, রাতের প্রথম প্রহরে শারীরিক মিলনে (sex) লিপ্ত হওয়া উচিত। মধ্যরাত্রি পেরিয়ে গেলে কখনওই আর যৌন মিলন করা উচিত না, কারণ এর ফলে যদি সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তার স্বাস্থ্য ভাল হয় না ।