স্বপ্নদোষ বা Nightfall হচ্ছে ছেলেদের ঘুমের মধ্যে বীর্যপাতের অভিজ্ঞতা। স্বপ্নদোষকে “ভেজাস্বপ্ন”ও বলা হয়ে থাকে। সাধারণত ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলে বা পুরুষ ও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রাথমিক বছরগুলোতে স্বপ্নদোষ বা Nightfall খুবই সাধারণ ব্যাপার।কিন্তু বয়ঃসন্ধিকাল পরেও যেকোন সময় স্বপ্নদোষ হতে পারে। স্বপ্নদোষের সাথে যৌন উত্তেজক স্বপ্নের সম্পর্ক থাকতে পারে, আবার তা নাও থাকতে পারে। আবার পুরুষ বা ছেলেদের উত্থান ছাড়াই স্বপ্নদোষ ঘটতে পারে। ঘুম থেকে জাগার আগের সময় বা সাধারণ ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্নদোষ হয়, তাকে ‘সেক্স ড্রিম’ বলা হয়। মহিলাদেরও ঘুমের মধ্যে চরম পুলক লাভের অভিজ্ঞতা ঘটতে পারে। কিছু ছেলে বা পুরুষ শুধু একটা নির্দিষ্ট বয়সে এ রকম স্বপ্ন দেখেন, পক্ষান্তরে অন্য বয়ঃসন্ধিকালের পর থেকে সারাজীবন এ রকমের স্বপ্ন দেখতেই থাকেন। ঘন ঘন স্বপ্নদোষের সাথে ঘনঘন হস্তমৈথুন করার কোনো সুনিশ্চিত সম্পর্ক নেই।
স্বপ্নদোষের কারণগুলো নিম্নরূপ–
১। বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের আধিক্যের জন্য।
২। খারাপ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করার জন্য।
৩। নীল/পর্ণ ছবিগুলোর মধ্যে আসক্ত হওয়া।
৪। খারাপ বই-পুস্তক পড়া।
৫। ঘুমাতে যাওয়ার আগে খারাপ বিষয় চিন্তা করা বা দেখা।
কিভাবে স্বপ্নদোষের প্রতিকার করবেন–
১. ব্যায়াম এবং যোগাসন একজন পুরুষকে তার শরীর, মন ও মস্তিষ্কের ওপর সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন যোগাসন ও ব্যায়াম করার ফলে যেসব যৌনকর্ম যা করলে আপনার স্বপ্নদোষ হতে পারে, আপনি তা নিজে এ কাজের মাধ্যমে আটকাতে পারবেন।
২. আপনার খাদ্যাভ্যাস বা খাদ্য তালিকার রুটিনে বদল বা পরিবর্তন আনলেও স্বপ্নদোষ রুখে দেওয়া যায়। যেসব পুরুষদের স্বপ্নদোষ হয়, তারা আম্লিক (অম্ল বেশী হয় এমন খাবার) খাবার খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিন।
৩. ধ্যান করলে মনোযোগ বাড়ে ও অভ্যন্তরীণ অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যায়। ফলে পুরুষরা অযাচিত বা হস্তমৈথুন কিছু কাজ করার থেকে নিজেদের আটকাতে পারবেন এবং এটি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার জন্য খুবই উপকারী।
৪. রাত্রে ঘুমানোর আগে গন্ধসার তেল দিয়ে স্নান করলে আপনার শরীর অনেক বেশি আরাম পাবে এবং আপনিও শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন।
৫. উপরের কাজগুলো নিয়ম মেনে করেও যদি রাত্রে ধাতু নির্গমন (স্বপ্ন দোষ) বন্ধ না হয়, তাহলে আপনাকে সেক্সোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। সঠিক চিকিৎসার দ্বারা স্বপ্নদোষের মূল কারণ বের করতে হবে এবং সেটার নিরাময় করতে হবে। তাহলে আপনার হারানো শারীরিক শক্তি ও যৌনক্ষমতা পুনরায় ফেরত পাবেন।
স্বপ্নদোষের প্রতিকার করা একেবারেই সহজ। স্বপ্নদোষ (nightmares) চিহ্নিতকরণ করা অত্যন্ত জরুরী, যাতে পুরুষের যৌন-জীবন ব্যাহত না হয়।
সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে স্বপ্নদোষ প্রতিকার:
১. লাউয়ের মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করার গুণ রয়েছে, যা শরীর গরম হতে দেয় না, তাই এটি স্বপ্নদোষের প্রতিকার করতে পারে।। লাউকে দু’ভাবে ব্যবহার করতে পারেন, যথাঃ
- রাত্রে শুয়ার আগে লাউয়ের জুস খেতে পারেন।
- তিলের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এটিকে মালিশ করে নিন।
২. আমলার রস শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এক গ্লাস আমলার রস খেলে স্বপ্নদোষের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
৩. পেঁয়াজ এবং রসুনের শারীরিক নানান অসুস্থতা সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে। ৩- ৪ কোয়া কাঁচা রসুন আর পেঁয়াজ যদি স্যালাত হিসেবে খাওয়া যায় তবে স্বপ্নদোষ অনেকটা কমে যেতে পারে।
৪. আগেই ভিজিয়ে রাখা অ্যালমন্ড, কলা ও আদা যদি দুধে সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে রাতে ধাতু নির্গমনের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। কলা ও দইয়ের মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করার গুণ রয়েছে যা এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। তাই নিয়মিত কলা ও দই খাওয়ার চেষ্টা করেন।
৫. সেলেরি ও মেথির রস অকাল বীর্যপাত ও স্বপ্নদোষের ক্ষেত্রে খুবই বেশি কার্যকরী। সেলেরি ও মেথির রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এইসব নিয়ম মেনে চললে কথা দিচ্ছি, আপনি স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাবেন অবশ্যই। স্বপ্নদোষ স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। স্বপ্নদোষ কোনো শারীরিক সমস্যা নয়, তবে স্বাভাবিকের চেয়ে খুব বেশি হলে তবে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ্য হয়ে উঠুন।